Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

পানি জীবন, পানিই খাদ্য কেউ থাকবে না পিছিয়ে

পানি জীবন, পানিই খাদ্য
কেউ থাকবে না পিছিয়ে
ড. সুরজিত সাহা রায়
‘পানি জীবন, পানিই খাদ্য। কেউ থাকবে না পিছিয়ে’। এই প্রতিপাদ্য নিয়ে এ বছর পালিত হচ্ছে বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০২৩। দেশের খাদ্য উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত দেশের অন্যতম সংবিধিবদ্ধ সরকারি সংস্থা কৃষি মন্ত্রণালয় প্রতিবারের মতো এবারও জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে দিবসটি পালনে সেমিনার আয়োজন করেছে।
বিশ্ব খাদ্য দিবসের মূল উদ্দেশ্য হলো ক্ষুধা, অপুষ্টি ও দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তোলা, কৃষিভিত্তিক উৎপাদনে উৎসাহ দান করা, কৃষির উন্নতিতে মনোযোগ দেওয়া, অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলো সহায়তা গ্রহণে উৎসাহ প্রদান করা, গ্রামীণ জনগণ, মূলত নারী ও পিছিয়ে পড়া মানুষের অবদানে উৎসাহ দান ও প্রযুক্তির সমৃদ্ধিকে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া।
মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর মধ্যে খাদ্যই প্রথম। বৈজ্ঞানিক বিবেচনায় পানি খাদ্য বিবেচিত না হলেও খাদ্য উৎপাদন এবং এ সংশ্লিষ্ট কর্মকা-ে পানির যে অপরিহার্যতা রয়েছে তাতে পানিকে খাদ্য বললেও অত্যুক্তি হবে না। পৃথিবীতে জীবনধারণের জন্য পানি অপরিহার্য। আমাদের খাদ্য উৎপাদন প্রক্রিয়া সরাসরি পানির ওপর নির্ভরশীল। আমাদের দেহের প্রায় ৫০ এবং পৃথিবী পৃষ্ঠের ৭০ শতাংশই হলো এই পানি। কিন্তু বিপুল পরিমাণ পানির মাত্র ২.৫ শতাংশ কৃষিকাজ, শিল্প উৎপাদন এবং মানুষের পান উপযোগী। পানি শুধু জীবন, অর্থনীতি ও প্রকৃতির চালিকা শক্তিই নয়, এটি আমাদের খাদ্য উৎপাদনের মূল ভিত্তি। পৃথিবীর স্বাদুপানির ৭২ শতাংশই কৃষি তথা খাদ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কিন্তু এই পানি অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদের মতো অসীম নয়। বিশ্বব্যাপী দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি, শহরায়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দ্রুত এই পানি শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমরা ক্রমেই এই মহামূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদটি হারাতে হারাতে এমন অবস্থানে পৌঁছে যাচ্ছি যেখান থেকে ফিরে আসার আর কোনো সুযোগ নেই। জলজ বাস্তুতন্ত্রের ওপর নির্ভরশীল বিশ্বের প্রায় ৬০০ মিলিয়ন মানুষ এই পানি দূষণ, বাস্তুতন্ত্রের বিলোপ, জলবায়ু পরিবর্তন ও অটেকসই চর্চার দরুন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। আমাদের বর্ধিত জনসংখ্যার জন্য যেমন আরো অধিক খাদ্য উৎপাদন করতে হবে, তেমনি পানির ব্যবহার আরো যৌক্তিক ও সীমিত করতে হবে যাতে করে পানির সমান প্রাপ্যতা নিশ্চিত হয়, আমাদের জলজ বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষিত থাকে এবং কেউই পিছিয়ে না থাকে। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সতেজ মৌসুমি খাদ্য বেছে নিয়ে, এমনকি খাদ্য অপচয় রোধ করে এবং নিরাপদ উপায়ে তা পুনর্ব্যবহারের পথ অনুসন্ধান করে আমরা পরিবর্তন সাধন করতে পারি যাতে করে পানি দূষণ ও অপচয় হ্রাস পায়।
বলা বাহুল্য, এই বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে বাংলাদেশের বিস্তৃত ভূখ-ের ওপর দিয়ে বহমান নদ-নদী, হাওর-বাঁওড়, বিল-ঝিল, পুকুর-দিঘি, বৈচিত্র্যপূর্ণ বিপুলসংখ্যক ছোট-বড় জলধারার পানি ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নে বর্তমান সরকার অসংখ্য  গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। একই সঙ্গে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ অর্জনের অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ পানি ব্যবস্থাপনা, স্যানিটেশন, কৃষিকাজ, শিল্প খাত ও বাস্তুচ্যুতি ইত্যাদি বিবেচনায় রেখে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার পানি চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছে। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি মোকাবিলায় সরকার পানি অবকাঠামো সংস্কার, নদীর তীর সংরক্ষণ, নদীর নাব্য রক্ষার্থে ড্রেজিং, খাল পুনঃখনন, প্রাকৃতিক জলধার রক্ষণাবেক্ষণ এবং নতুন জলাধার ও ব্যারাজ নির্মাণের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।
সাম্প্রতিক মহামারি করোনা মারাত্মক সংকট ডেকে এনেছিল কৃষক ও খাদ্য ব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার জীবনে। করোনাভাইরাস সংকটের কারণে খাদ্য সমস্যাটি কঠিন হয়ে ওঠার আশঙ্কা ছিল উন্নত দেশগুলোতেও। দুই বছরের করোনাভাইরাস মহামারির ধাক্কা না কাটতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বকে চরম খাদ্য সংকটের দিকে ঠেলে দিয়েছে। কিন্তু তীব্র সংকটময় এ পরিস্থিতেও বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ইতিবাচক। বাংলাদেশের খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে প্রকাশিত জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ‘র‌্যাপিড অ্যাসেসমেন্ট অব ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন সিকিউরিটি ইন দ্য কনটেক্সট অব কোভিড-১৯ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিগত ৪০ বছরে কৃষিক্ষেত্রে ও খাদ্য নিরাপত্তায় বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। বিশেষত প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, আবাদযোগ্য জমি হ্রাস, জলবায়ু পরিবর্তন এবং দক্ষিণাঞ্চলে লবণাক্ততার পরিমাণ বাড়ার চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বাংলাদেশ দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে, পেয়েছে শাকসবজি, ফলমূল, মাছ, মাংস উৎপাদনে ব্যাপক সফলতা।
কৃষির উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সম্প্রতি আমরা নিরবচ্ছিন্ন, সাশ্রয়ী ও দ্রুত যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার জন্য নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি। এ সেতুর মাধ্যমে নদীবিধৌত উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষি ও মৎস্যসম্পদ আহরণ এবং সারা দেশে দ্রুত বাজারজাতকরণের ফলে কৃষি ও কৃষকের জীবনমান আরো উন্নত হবে এবং দেশের সামগ্রিক খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো শক্তিশালী হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী পদক্ষেপে আমরা খাদ্য উৎপাদনের অন্যতম রসদ পানির যুক্তিযুক্ত ব্যবস্থাপনার জন্য আমরা যুক্ত হয়েছি ডেল্টা প্ল্যানের মতো বৃহৎ কর্মকা-ে। কৃষির উন্নয়নকে টেকসই করতে তথা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চাহিদার কথা মাথায় রেখেই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
২০২১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ ফুড সিস্টেম সামিটে করোনা-পরবর্তী পুনরুদ্ধার ও স্থিতিশীল খাদ্য ব্যবস্থার মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের ওপর জোর দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য অধিক খাদ্য উৎপাদন, খাদ্যের অপচয় হ্রাস, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তার জন্য কৃষিতে গবেষণা, বিনিয়োগ, উন্নত প্রযুক্তি বিনিময়, প্রয়োজনীয় তহবিল ইত্যাদিসহ পাঁচ দফা সুপারিশ পেশ করেন। জাতিসংঘ ফুড সিস্টেম সামিটে বিশ্ব খাদ্য ব্যবস্থার সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে কৃষি মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পাঁচ দফা বাস্তবায়ন ও ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এই সুপারিশগুলো মাথায় রেখে এবং পানিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে আমরা একত্রে খাদ্য, মানুষ তথা পৃথিবীর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে সামনে এগিয়ে যেতে পারি।

লেখক : পরিচালক, কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ফার্মগেট, ঢাকা। ফোন : ০১৭১১৯৬৯৩১৮ ই-মেইল :dirais@ais.gov.bd


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon